যিনা-ব্যভিচারের ৭টি পর্যায় সম্পর্ক

যিনা-ব্যভিচারের ৭টি পর্যায় সম্পর্কে আপনার জানা আছে কি?
আপনি যেদিন থেকে প্রেম ভালবাসা শুরু করেছেন মানেই ইন প্রসেস ৮৫% যিনাহ'র গুনার মধ্যে আছেন (৬ ভাগ সম্পন্ন) এখন আজকাল যেকোন সময়, শয়তানের সৃষ্টি করা সুযোগে আপনি এই ব্যাপারে শতভাগ পূর্ন করে ফেলবেন।
অবৈধ প্রেম ভালবাসা যে যিনা - এই কথা অনেকে মানতে নারাজ। অনেকে যিনা বলতে কেবল ব্যাভিচার (বেবী জন্ম দেবার যে প্রসেস) সেটা বুঝে থাকেন, আর তাই এমন কোন কাপল যারা কিনা এই ধরণের সম্পর্ক এখন পর্যন্ত করেন নি, তাদের গর্ব করে বলতে শোনা যায়,
আমাদের প্রেম পবিত্র। আমাদের মাঝে ওসব নেই।
কিন্তু যিনা সম্পর্কে তাদের ধারণা ভুল। যিনার ৭ টা স্টেজ রয়েছে, যার মধ্যে ৭ নম্বর টা হলো ব্যাভিচার। তার আগের ৬ টা আপনাকে ৭ নম্বর স্টেইজে নিয়ে যায়।
আপনি যখন স্টেজ-১ এ তখনই আপনি যিনা শুরু করেছেন।
দেখুন আল্লাহ তায়ালা কি বলেন, "তোমরা যিনার ধারে কাছেও যেও না, ওটা অত্যন্ত খারাপ কাজ এবং খুবই জঘন্য পথ।" (সূরাহ ইসরা, আয়াত : ৩২)
যিনার ধারে কাছে যাওয়া বলতে কি বুঝায়?
বিবাহপূর্বক দেখা-সাক্ষাৎ করা, ফ্রি লি কথা বলা, সেমি-স্বামী-স্ত্রী এর মত করে চলাফেরা শুরু করা, ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি করা, নিভৃতে একত্রিত হওয়া ইত্যাদি যিনার প্রাথমিক স্টেজ। আর যিনা মানেই শুধু ওটা (যে প্রসেসে বেবী হয়ে থাকে) বুঝায় না, বরং..
যিনা অনেক ধরণের যেমনঃ অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত নারী পুরুষের কামনা (অন্তরের যিনা), হারাম দৃষ্টিপাত (চোখের যিনা), স্পর্শ করা (হাতের যিনা), অশ্লীল কথা বলা (কথার যিনা), বিভিন্ন প্রকার নোংরামি ও অশ্লীলতা আর সর্বশেষ যিনা হচ্ছে-ব্যভিচার।
এতো জঘন্য কাজে লিপ্ত থেকেও তারা এইগুলোতে জড়িত থাকে, কারণ শয়তান এই পাপগুলোকে তাদের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে যে, তারা এইগুলোর মোহ থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনা।
শয়তান মানুষকে অশ্লীল ও মন্দ কর্মে প্রলুব্ধ করে, আর আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যে শয়তানের পদাংক অনুসরণ করে, সে জেনে রাখুক, শয়তান অশ্লীল ও মন্দ কাজের আদেশ দেয় (প্রলুব্ধ করে)।” [সূরাহ আন-নূর, আয়াত : ২১]
যিনা বা ব্যভিচার বলতে বুঝায় ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধন ছাড়া অবৈধ পন্থায় যৌন তৃপ্তি লাভ করাকে। ইসলামী শরীয়াতে অবৈধ পন্থায় যৌন সম্ভোগ সম্পূর্ণ হারাম এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, "মানুষ তার সমগ্র ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে জিনা করে। দেখা হচ্ছে চোখের জিনা,ফুঁসলানো কণ্ঠের জিনা, তৃপ্তির সাথে কথা শোনা কানের জিনা, হাত দিয়ে স্পর্শ করা হাতের জিনা, কোনো অবৈধ উদ্দেশ্যে পথ চলা পায়ের জিনা, এভাবে ব্যভিচারের যাবতীয় ভূমিকা যখন পুরোপুরি পালিত হয়, তখন লজ্জাস্থান তার পূর্ণতা দান করে অথবা পূর্ণতা দান থেকে বিরত থাকে।" [বুখারি, মুসলিম ও আবু দাউদ]
যিনা/ব্যভিচার ৭ টি জিনিস দিয়ে হয়,
● মন- এখান থেকেই ব্যভিচারের উৎপত্তি। যে ব্যক্তি মনের বিরুদ্ধে চলতে পারে সেই পূর্ণ ঈমানদার মুসলমান হয়।
● চোখ- চোখের ব্যভিচার সবচেয়ে বড় ব্যভিচার। কারোর প্রতি অসাবধানতাবশত প্রথমবার চোখ পড়লে পাপ হয়না কিন্তু ২য় বার তাকালে বা ১ম বার দৃষ্টির পর সাথে সাথে দৃষ্টি ফিরিয়ে না নিলে যিনা তথা ব্যভিচার হয়।
● জিহ্বা- জিহ্বা দ্বারা ব্যভিচার হয় যখন প্রেমিক প্রেমিকা পরস্পরের সাথে কথা বলে রক্ত ও স্ত্রীর সম্পর্ক ছাড়া।
● কান- এটা দিয়ে ব্যভিচার হয় যখন প্রেমিক প্রেমিকা পরস্পরের কথা শোনে।
● হাত- এটা দিয়ে ব্যভিচার হয় যখন কোন প্রেমিক প্রেমিকা শরীরের যেকোন অংশ স্পর্শ করে।
● পা- এটা দিয়ে ব্যভিচার হয় যখন পায়ে হেটে কাঙ্খিত কোন প্রেমিক প্রেমিকার কাছে যাওয়া হয়। (মডার্ণ ভাষায় ডেটিং)
● গুপ্ত অঙ্গ- এটা দিয়েই শুধু ব্যভিচার হয় মানুষ তা ভাবলেও এটার স্থান সবার পরে।
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর এরশাদ অনুযায়ী, উপরের ৬ টিকে দমন করতে পারলেই ৭ নম্বর তথা এই অঙ্গ হেফাযত করা যাবে।
তাই, প্রেম নয়, বিয়ে করুন, যিনা ছাড়ুন, আল্লাহ'র সন্তুষ্টি অর্জন করুন, সুখী দাম্পত্য জীবন উপভোগ করুন, সম্পর্কটা কে জান্নাত পর্যন্ত গড়িয়ে নিয়ে যান।
লেখাঃ- MD Shahidul Afser (আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)

Post a Comment

Thanks
© Priyo blog. All rights reserved. Premium By FC Themes